ঢাকা ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
পোস্টাল ব্যালটে ভোট ও ইসির অ্যাপ্স “পোস্টাল ভোটে বিডি” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বদের জন্য ফরাসি ভাষা ও নাগরিক শিক্ষা পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পর্তুগাল-বাংলাদেশ কমিউনিটির আয়োজনে আনন্দ ভ্রমণ কারাদণ্ড কার্যকরের আগে এলিসি প্রাসাদে পূর্বসূরি সারকোজিকে আমন্ত্রণ জানালেন ম্যাক্রোঁ লুভর জাদুঘরে দুঃসাহসিক ডাকাতি: ফ্রান্সে দোষারোপের রাজনীতি তুঙ্গে বিশ্ববিখ্যাত প্যারিস ল্যুভর জাদুঘরে চুরি ফ্রান্সে “আশা এবং আমার সংগ্রাম” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা দেড় হাজারের বেশি মানুষের অংশগ্রহনে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হলো ১২তম মুসলিম চ্যারিটি রান বিগত ১১৭ বছরের সব দলিল অনলাইনে যাচ্ছে, ভূমি মালিকদের করণীয় তরুণদের বিদেশমুখিতা: সুযোগ না সংকট? ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য এক সতর্কবার্তা”

প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ : ৭৭তম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

  • আপডেট সময় ০৮:৫৮:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

নাসরিন ইসলাম  : বাংলা আধুনিক কবিতার এক অনন্য নাম হেলাল হাফিজ। ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পিতা খোরশেদ আলী তালুকদার ও মাতা কোকিলা বেগমের সন্তান হেলাল হাফিজ অতি অল্প বয়সেই মাকে হারান—তিন বছর বয়সে। এই মাতৃহারা শৈশব তাঁর জীবনে বিষাদের এক অনন্ত ছায়া ফেলে, যা পরবর্তী সময়ে তাঁর কবিতার অন্যতম অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে।

শৈশব, কৈশোর ও শিক্ষাজীবন

মাতৃহারা হেলাল হাফিজ পিতার আদরেই বড় হন। নেত্রকোণা শহরেই কেটেছে তাঁর শৈশব ও কৈশোর। এই সময়কে তিনি নিজেই বলেছেন “ব্যতিক্রমী” — কারণ এখানেই জন্ম নেয় তাঁর জীবনের বিষাদের দীর্ঘ ক্ষত। তবুও তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভাধর; ফুটবল, ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন খেলায় ছিলেন পারদর্শী, এবং শহরের বিশিষ্টজনদের লন টেনিস খেলা দেখতে ভালোবাসতেন।

১৯৬৫ সালে তিনি নেত্রকোণা দত্ত হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোণা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় বিদ্যালয়ের দেয়াল পত্রিকায় তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। শুরুতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়ে জীবনের নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেন।

ষাটের দশকের কবি ও ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’

ষাটের দশকের উত্তাল রাজনীতি ও গণআন্দোলন হেলাল হাফিজের কবিতার মূল প্রেরণা হয়ে ওঠে। ১৯৬৯ সালে তিনি লেখেন বিখ্যাত কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’, যার মাধ্যমে তিনি ঘোষণা দেন—

“এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়,
এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।”

এই পঙ্ক্তিগুলো ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে। যদিও কবিতাটি রাষ্ট্রবিরোধী অভিযোগে কোনো পত্রিকায় প্রকাশের অনুমতি পায়নি, আহমদ ছফা ও হুমায়ূন কবীর সেটির প্রথম দুটি লাইন দেয়ালে সাঁটিয়ে দেন—যা মুহূর্তেই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

মুক্তিযুদ্ধ ও জীবনসংগ্রাম

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান কবি। ফজলুল হক হলে বন্ধুর সঙ্গে আড্ডার কারণে সে রাতে নিজের ইকবাল হলে না ফেরায় তিনি পাকিস্তানি সেনাদের হত্যাযজ্ঞ থেকে রক্ষা পান। পরদিন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নির্মলেন্দু গুণের সঙ্গে দেখা হলে, দুই কবির অশ্রুসিক্ত আলিঙ্গন স্বাধীনতার ইতিহাসে এক মানবিক মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

কর্মজীবন ও সাহিত্যকীর্তি

১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় হেলাল হাফিজ সাংবাদিকতা শুরু করেন দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায়। পরে তিনি দেশযুগান্তর পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে—যা তাকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে।

প্রেম, বেদনা ও একাকিত্ব

হেলাল হাফিজের জীবনের আরেকটি অনিবার্য অধ্যায় হলো তাঁর প্রেম। স্কুলজীবনে তিনি হেলেন নামের এক মেয়ের প্রেমে পড়েন। কিন্তু হেলেনের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর কবি ভীষণভাবে মর্মাহত হন। প্রায় ১৫ দিন বাকরুদ্ধ ছিলেন তিনি। মাতৃহারা শৈশবের বেদনার সঙ্গে যোগ হয় প্রিয়তমার বিচ্ছেদ—যা তাঁকে আজীবন একা করে তোলে। তিনি কখনও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি।

এই গভীর বেদনা ও প্রেমের শূন্যতা থেকেই জন্ম নেয় তাঁর অসংখ্য হৃদয়স্পর্শী কবিতা। ‘যে জলে আগুন জ্বলে’-এর প্রায় প্রতিটি কবিতাতেই প্রেম ও বিচ্ছেদের সুর প্রতিধ্বনিত হয়।

কাব্যজগতে অবদান ও উত্তরাধিকার

প্রেম ও দ্রোহের কবি হিসেবে হেলাল হাফিজ বিংশ শতাব্দীর শেষাংশে অসামান্য জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তাঁর কবিতা শুধু ভালোবাসা নয়—একই সঙ্গে প্রতিবাদ, স্বাধীনতা, বেদনা ও মানবিকতার প্রতীক। তাঁর প্রতিটি কবিতা যেন তাঁর নিজ জীবনের প্রতিচ্ছবি।

চিরন্তন উক্তি

কবি হেলাল হাফিজের কিছু বিখ্যাত উক্তি পাঠকের হৃদয়ে চিরকাল অনুরণিত হবে—

“এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।”

“আমার শৈশব বলে কিছু নেই, আমার কৈশোর বলতেও কিছু নেই—আছে শুধু বিষাদের গহীন বিস্তার।”

উপসংহার
বাংলা কবিতার ইতিহাসে হেলাল হাফিজ এক কিংবদন্তি নাম—যিনি প্রেম, দ্রোহ ও স্বাধীনতার চেতনায় নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। তাঁর কবিতা সময়ের সীমা পেরিয়ে আজও তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে।
৭৭তম জন্মদিনে এই মহাকবির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

লেখক : কবি ও কথা সাহিত্যিক

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

পোস্টাল ব্যালটে ভোট ও ইসির অ্যাপ্স “পোস্টাল ভোটে বিডি” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ : ৭৭তম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

আপডেট সময় ০৮:৫৮:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

নাসরিন ইসলাম  : বাংলা আধুনিক কবিতার এক অনন্য নাম হেলাল হাফিজ। ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পিতা খোরশেদ আলী তালুকদার ও মাতা কোকিলা বেগমের সন্তান হেলাল হাফিজ অতি অল্প বয়সেই মাকে হারান—তিন বছর বয়সে। এই মাতৃহারা শৈশব তাঁর জীবনে বিষাদের এক অনন্ত ছায়া ফেলে, যা পরবর্তী সময়ে তাঁর কবিতার অন্যতম অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে।

শৈশব, কৈশোর ও শিক্ষাজীবন

মাতৃহারা হেলাল হাফিজ পিতার আদরেই বড় হন। নেত্রকোণা শহরেই কেটেছে তাঁর শৈশব ও কৈশোর। এই সময়কে তিনি নিজেই বলেছেন “ব্যতিক্রমী” — কারণ এখানেই জন্ম নেয় তাঁর জীবনের বিষাদের দীর্ঘ ক্ষত। তবুও তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভাধর; ফুটবল, ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন খেলায় ছিলেন পারদর্শী, এবং শহরের বিশিষ্টজনদের লন টেনিস খেলা দেখতে ভালোবাসতেন।

১৯৬৫ সালে তিনি নেত্রকোণা দত্ত হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোণা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় বিদ্যালয়ের দেয়াল পত্রিকায় তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। শুরুতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়ে জীবনের নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেন।

ষাটের দশকের কবি ও ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’

ষাটের দশকের উত্তাল রাজনীতি ও গণআন্দোলন হেলাল হাফিজের কবিতার মূল প্রেরণা হয়ে ওঠে। ১৯৬৯ সালে তিনি লেখেন বিখ্যাত কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’, যার মাধ্যমে তিনি ঘোষণা দেন—

“এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়,
এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।”

এই পঙ্ক্তিগুলো ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে। যদিও কবিতাটি রাষ্ট্রবিরোধী অভিযোগে কোনো পত্রিকায় প্রকাশের অনুমতি পায়নি, আহমদ ছফা ও হুমায়ূন কবীর সেটির প্রথম দুটি লাইন দেয়ালে সাঁটিয়ে দেন—যা মুহূর্তেই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

মুক্তিযুদ্ধ ও জীবনসংগ্রাম

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান কবি। ফজলুল হক হলে বন্ধুর সঙ্গে আড্ডার কারণে সে রাতে নিজের ইকবাল হলে না ফেরায় তিনি পাকিস্তানি সেনাদের হত্যাযজ্ঞ থেকে রক্ষা পান। পরদিন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নির্মলেন্দু গুণের সঙ্গে দেখা হলে, দুই কবির অশ্রুসিক্ত আলিঙ্গন স্বাধীনতার ইতিহাসে এক মানবিক মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

কর্মজীবন ও সাহিত্যকীর্তি

১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় হেলাল হাফিজ সাংবাদিকতা শুরু করেন দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায়। পরে তিনি দেশযুগান্তর পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে—যা তাকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে।

প্রেম, বেদনা ও একাকিত্ব

হেলাল হাফিজের জীবনের আরেকটি অনিবার্য অধ্যায় হলো তাঁর প্রেম। স্কুলজীবনে তিনি হেলেন নামের এক মেয়ের প্রেমে পড়েন। কিন্তু হেলেনের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর কবি ভীষণভাবে মর্মাহত হন। প্রায় ১৫ দিন বাকরুদ্ধ ছিলেন তিনি। মাতৃহারা শৈশবের বেদনার সঙ্গে যোগ হয় প্রিয়তমার বিচ্ছেদ—যা তাঁকে আজীবন একা করে তোলে। তিনি কখনও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি।

এই গভীর বেদনা ও প্রেমের শূন্যতা থেকেই জন্ম নেয় তাঁর অসংখ্য হৃদয়স্পর্শী কবিতা। ‘যে জলে আগুন জ্বলে’-এর প্রায় প্রতিটি কবিতাতেই প্রেম ও বিচ্ছেদের সুর প্রতিধ্বনিত হয়।

কাব্যজগতে অবদান ও উত্তরাধিকার

প্রেম ও দ্রোহের কবি হিসেবে হেলাল হাফিজ বিংশ শতাব্দীর শেষাংশে অসামান্য জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তাঁর কবিতা শুধু ভালোবাসা নয়—একই সঙ্গে প্রতিবাদ, স্বাধীনতা, বেদনা ও মানবিকতার প্রতীক। তাঁর প্রতিটি কবিতা যেন তাঁর নিজ জীবনের প্রতিচ্ছবি।

চিরন্তন উক্তি

কবি হেলাল হাফিজের কিছু বিখ্যাত উক্তি পাঠকের হৃদয়ে চিরকাল অনুরণিত হবে—

“এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।”

“আমার শৈশব বলে কিছু নেই, আমার কৈশোর বলতেও কিছু নেই—আছে শুধু বিষাদের গহীন বিস্তার।”

উপসংহার
বাংলা কবিতার ইতিহাসে হেলাল হাফিজ এক কিংবদন্তি নাম—যিনি প্রেম, দ্রোহ ও স্বাধীনতার চেতনায় নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। তাঁর কবিতা সময়ের সীমা পেরিয়ে আজও তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে।
৭৭তম জন্মদিনে এই মহাকবির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

লেখক : কবি ও কথা সাহিত্যিক