ঢাকা ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ফ্রান্সে এফএফবিএ সম্মাননায় ভূষিত হলেন বাংলাদেশি নয়ন এনকে ফ্রান্স- বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা ফ্রান্সে বিএনপির ৩১ দফা নিয়ে কর্মশালা ও লিফলেট বিতরণ প্যারিসে বাংলাদেশী মালিকানাধীন রেস্টুরেন্ট উদ্বোধন ফ্রান্সের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাউন্সিলর রাব্বানী খানের ফ্রান্স সিনেটের ‘মেডেল ড’অনার’ লাভ “অধিকার, স্বাধীনতা এবং সমাজের দ্বৈত মানসিকতা* ফ্রান্সে লায়েক আহমদ তালুকদারের পিতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত অখন্ড বাংলাদেশ আন্দোলনের প্রধান হাসনাত আরিয়ান খানকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ফ্রান্সে বিশ্ব স্বজন ফাউন্ডেশনের ১ যুগপূর্তি উদযাপন বালাগঞ্জে জামালপুর তোহফা ফাউন্ডেশনের ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার উন্মোচন

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে উত্তাল ভারত

  • আপডেট সময় ০৬:১৪:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ১৫৭ বার পড়া হয়েছে

বিক্ষোভে ছেয়ে গেছে পুরো ভারত। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে সোমবার দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে। এর আগে রোববার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ আরো ফুঁসে ওঠেছে। গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছে বিতর্কিত বিলটির প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের দমাতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নিরাপত্তাবাহিনীও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন তিনি।
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজধানী নয়াদিল্লিতে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া পুলিশের হামলার তদন্তের দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে।

জামিয়ার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে পরীক্ষা বর্জন করেছে দিল্লি ইউনিভার্সিটির বহু শিক্ষার্থীও। সোমবার ইন্ডিয়া গেটের কাছে বিক্ষোভের কথা জানিয়েছে তারা। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে, জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এদিন সকালে, তীব্র ঠাণ্ডা আবহাওয়ার মধ্যে শার্ট খুলে উদোম গায়ে তাদের সহপাঠীদের ওপর হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সমপ্রতি বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে নিপীড়নের অভিযোগে ভারতে পালিয়ে যাওয়া মুখে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব নিশ্চিতে আইন সংশোধন করে বিল পাস করেছে মোদি সরকার। ১২ই ডিসেম্বর রাতে আইনে পরিণত হয়েছে বিতর্কিত বিলটি। সমালোচকরা বিলটিকে মুসলিমবিরোধী বিল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস সহ বহু বিরোধী দল এর বিরোধিতা করেছে। আইনে পরিণত হওয়ার আগেই বিলটির বিরুদ্ধে সহিংসতা বেড়েছে সমগ্র ভারতে। আসামসহ ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে অবৈধ অভিবাসীদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি বাতিল ও এই অঞ্চলকে ওই আইনের আওতামুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ করছে তারা। বহু অঞ্চলে জারি হয়েছে কারফিউ। বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে মোবাইলফোন, ইন্টারনেট ও এসএমএস সেবা। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র সংঘাত। রোববার দিল্লির জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিলটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। তাদের দমাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ক্যামপাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। একাধিক শিক্ষার্থীকে মারধর ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে নিরাপত্তাবাহিনী। পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে চারপাশ। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এসব ঘটনায় আহত হন অনেকে। আটক করা হয় কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে। সোমবার তাদের অনেককে ছেড়ে দেয়া হলেও কমেনি উত্তেজনা।
সোমবার পুলিশের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, এদিন উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারতে বিক্ষোভ তীব্র রূপ নেয়। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী প্রাণ হারান। ভুপাল, জয়পুর, লাদাখ, কেরালা, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ ও লক্ষ্ণৌতে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। গাড়ি, বাস ও রেলওয়ে স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। সবখানে সরকারবিরোধী আন্দোলনের মতো অবস্থা বিরাজ করছে। পর্যবেক্ষকরা জানান, বিশেষ করে প্রত্যন্ত ও অনুন্নত এলাকাগুলোয় পুলিশের নির্মমতা তীব্র আকারে দেখা গেছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, লক্ষ্ণৌর নাওডা কলেজে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে ‘আওয়াজ দো, হাম এক হ্যাঁ’ (আওয়াজ দাও, আমরা ঐক্যবদ্ধ) স্লোগান দিয়ে মিছিল করেছে। পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে। উত্তর প্রদেশ পুলিশের মহাপরিচালক ওপি সিং জানান, এখানে নাদওয়াতুল উলামার কিছু শিক্ষার্থী বিক্ষোভের চেষ্টা করেছিল। তারা ক্যামপাসের ভেতর থেকে পাথর ছুড়েছে। আমাদের বাধা দিয়েছে। কাউকে ক্যামপাস থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না।
হায়দ্রাবাদের মাওলানা আজাদ উর্দু ইউনিভার্সিটিতেও রোববার দিবাগত রাতে বিক্ষোভ করেছে বহু শিক্ষার্থী। তারা পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে বারানসির বানারাস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতেও। কলকাতার যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে পুলিশি ‘গুণ্ডামির’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।
বানারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির এক পিএইচডি শিক্ষার্থী বলেছে, জামিয়ায় যা হয়েছে সেটাকে কেবল পুলিশি দমন অভিযান বলা যায় না। এটা সপষ্ট গুণ্ডামি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশরা বাইক ও শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারধর করছে। সরকারকে এসবের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
যাদবপুর ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী রিধিমা দুয়া প্রশ্ন তোলেন, জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কাঁদানে গ্যাস কীভাবে ঢুকলো? তিনি বলেন, আমায় যদি রাস্তায় নির্যাতন করা হয় ও আমি যদি পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে যাই, তাহলে আমায় নিয়ম সমপর্কে বলা হবে। এখন নিয়ম কই? বন্ধ ক্যামপাসের ভেতর কাঁদানে গ্যাস কীভাবে ঢুকলো? পুলিশ সদস্যরা উপাচার্যের কাছ থেকে অনুমতি ছাড়া কীভাবে ক্যামপাসের ভেতর ঢুকতে পারে। এ ব্যাপারে অবশ্যই তদন্ত হতে হবে।
এদিকে, জামিয়ার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সবার আগে বিক্ষোভ করে আলিগড় ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। রোববার শেষ রাতের দিকে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পরপর কর্তৃপক্ষ ৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। বিক্ষোভ হয়েছে জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটিতেও।

সূত্রঃ মানবজমিন

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

ফ্রান্সে এফএফবিএ সম্মাননায় ভূষিত হলেন বাংলাদেশি নয়ন এনকে

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে উত্তাল ভারত

আপডেট সময় ০৬:১৪:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯

বিক্ষোভে ছেয়ে গেছে পুরো ভারত। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে সোমবার দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে। এর আগে রোববার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ আরো ফুঁসে ওঠেছে। গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছে বিতর্কিত বিলটির প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের দমাতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নিরাপত্তাবাহিনীও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন তিনি।
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজধানী নয়াদিল্লিতে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া পুলিশের হামলার তদন্তের দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে।

জামিয়ার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে পরীক্ষা বর্জন করেছে দিল্লি ইউনিভার্সিটির বহু শিক্ষার্থীও। সোমবার ইন্ডিয়া গেটের কাছে বিক্ষোভের কথা জানিয়েছে তারা। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে, জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এদিন সকালে, তীব্র ঠাণ্ডা আবহাওয়ার মধ্যে শার্ট খুলে উদোম গায়ে তাদের সহপাঠীদের ওপর হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সমপ্রতি বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে নিপীড়নের অভিযোগে ভারতে পালিয়ে যাওয়া মুখে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব নিশ্চিতে আইন সংশোধন করে বিল পাস করেছে মোদি সরকার। ১২ই ডিসেম্বর রাতে আইনে পরিণত হয়েছে বিতর্কিত বিলটি। সমালোচকরা বিলটিকে মুসলিমবিরোধী বিল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস সহ বহু বিরোধী দল এর বিরোধিতা করেছে। আইনে পরিণত হওয়ার আগেই বিলটির বিরুদ্ধে সহিংসতা বেড়েছে সমগ্র ভারতে। আসামসহ ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে অবৈধ অভিবাসীদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি বাতিল ও এই অঞ্চলকে ওই আইনের আওতামুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ করছে তারা। বহু অঞ্চলে জারি হয়েছে কারফিউ। বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে মোবাইলফোন, ইন্টারনেট ও এসএমএস সেবা। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র সংঘাত। রোববার দিল্লির জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিলটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। তাদের দমাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ক্যামপাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। একাধিক শিক্ষার্থীকে মারধর ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে নিরাপত্তাবাহিনী। পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে চারপাশ। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এসব ঘটনায় আহত হন অনেকে। আটক করা হয় কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে। সোমবার তাদের অনেককে ছেড়ে দেয়া হলেও কমেনি উত্তেজনা।
সোমবার পুলিশের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, এদিন উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারতে বিক্ষোভ তীব্র রূপ নেয়। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী প্রাণ হারান। ভুপাল, জয়পুর, লাদাখ, কেরালা, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ ও লক্ষ্ণৌতে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। গাড়ি, বাস ও রেলওয়ে স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। সবখানে সরকারবিরোধী আন্দোলনের মতো অবস্থা বিরাজ করছে। পর্যবেক্ষকরা জানান, বিশেষ করে প্রত্যন্ত ও অনুন্নত এলাকাগুলোয় পুলিশের নির্মমতা তীব্র আকারে দেখা গেছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, লক্ষ্ণৌর নাওডা কলেজে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে ‘আওয়াজ দো, হাম এক হ্যাঁ’ (আওয়াজ দাও, আমরা ঐক্যবদ্ধ) স্লোগান দিয়ে মিছিল করেছে। পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে। উত্তর প্রদেশ পুলিশের মহাপরিচালক ওপি সিং জানান, এখানে নাদওয়াতুল উলামার কিছু শিক্ষার্থী বিক্ষোভের চেষ্টা করেছিল। তারা ক্যামপাসের ভেতর থেকে পাথর ছুড়েছে। আমাদের বাধা দিয়েছে। কাউকে ক্যামপাস থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না।
হায়দ্রাবাদের মাওলানা আজাদ উর্দু ইউনিভার্সিটিতেও রোববার দিবাগত রাতে বিক্ষোভ করেছে বহু শিক্ষার্থী। তারা পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে বারানসির বানারাস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতেও। কলকাতার যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে পুলিশি ‘গুণ্ডামির’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।
বানারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির এক পিএইচডি শিক্ষার্থী বলেছে, জামিয়ায় যা হয়েছে সেটাকে কেবল পুলিশি দমন অভিযান বলা যায় না। এটা সপষ্ট গুণ্ডামি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশরা বাইক ও শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারধর করছে। সরকারকে এসবের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
যাদবপুর ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী রিধিমা দুয়া প্রশ্ন তোলেন, জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কাঁদানে গ্যাস কীভাবে ঢুকলো? তিনি বলেন, আমায় যদি রাস্তায় নির্যাতন করা হয় ও আমি যদি পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে যাই, তাহলে আমায় নিয়ম সমপর্কে বলা হবে। এখন নিয়ম কই? বন্ধ ক্যামপাসের ভেতর কাঁদানে গ্যাস কীভাবে ঢুকলো? পুলিশ সদস্যরা উপাচার্যের কাছ থেকে অনুমতি ছাড়া কীভাবে ক্যামপাসের ভেতর ঢুকতে পারে। এ ব্যাপারে অবশ্যই তদন্ত হতে হবে।
এদিকে, জামিয়ার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সবার আগে বিক্ষোভ করে আলিগড় ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। রোববার শেষ রাতের দিকে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পরপর কর্তৃপক্ষ ৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। বিক্ষোভ হয়েছে জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটিতেও।

সূত্রঃ মানবজমিন